উদ্ভিদ সংগনিরোধ আইন ২০১১ এবং উদ্ভিদ সংগনিরোধ বিধিমালা ২০১৮ এর অধীনে উদ্ভিদ সংগনিরোধ স্টেশন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর, ঢাকা এর কার্যক্রম পরিচালিত হয়।উদ্ভিদ সংগনিরোধ আইন-২০১১ এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিধান নিচে উল্লেখ করা হলোঃ 


ক। উদ্ভিদ সংগনিরোধ কর্তৃপক্ষের ইস্যুকৃত উদ্ভিদ স্বাস্থ্য সনদপত্র (Phytosanitary Certificate) ছাড়া বহির্গমন যাত্রী কোন প্রকার উদ্ভিদ বা উদ্ভিদজাত পণ্য পরিবহন করতে পারবেন না। {উদ্ভিদ সংগনিরোধ আইন ২০১১ ধারা -১৮(১)}।

খ। কোন উদ্ভিদ বা উদ্ভিদজাত দ্রব্য গন্তব্য দেশে নিষিদ্ধ না হলে বহির্গামী যাত্রীর আবেদনের প্রেক্ষিতে উদ্ভিদ সংগনিরোধ কর্মকর্তা যাত্রীর সাথে বহনকৃত বা লাগেজের মাধ্যমে পরিবহনকৃত উদ্ভিদ বা উদ্ভিদজাত দ্রব্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে, প্রয়োজনে শোধন এবং উদ্ভিদ স্বাস্থ্য  সনদ (Phytosanitary Certificate) ইস্যু করতে পারবেন। {উদ্ভিদ সংগনিরোধ বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি-১৫(৭)}

গ। শুল্ক কর্মকর্তা কর্তৃক অবহিত করন: উদ্ভিদ ও উদ্ভিদজাত পণ্য  টার্মিনালে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে (আগমনি বা বহির্গমন যাত্রীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য) শুল্ক কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট উদ্ভিদ সংগনিরোধ কর্মকর্তাকে অবহিত করবেন। {উদ্ভিদ সংগনিরোধ বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি-৭(২)}

ঘ। যাত্রীর সাথে বা লাগেজে পরিবহনকৃত উদ্ভিদ বা উদ্ভিদজাত দ্রব্যাদি, উপকারী জীবানু অথবা প্যাকিং সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রসহ যাত্রী আগমনী টার্মিনালে অবস্থিত উদ্ভিদ সংগনিরোধ ডেস্ক-এ কর্তব্যরত উদ্ভিদ সংগনিরোধ কর্মকর্তার নিকট ঘোষনা প্রদান করা সহ পণ্য প্রদর্শন করতে হবে। {আইন ধারা -১২(১) এবং বিধি ৯(৮)}

ঙ। উদ্ভিদ সংগনিরোধ কর্মকর্তা উল্লিখিত দ্রব্যাদি পরিদর্শন ও পরীক্ষা-নিরীক্ষান্তে পণ্যটি ছাড়করণ বা ধ্বংসকরণ বা শোধন বা নিষ্পত্তি করিবার ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। {আইনের ধারা-১২(২)}

চ। যাত্রীর সাথে বা লাগেজে পরিবহনকৃত উদ্ভিদ বা উদ্ভিদজাত দ্রব্যাদি উদ্ভিদ সংগনিরোধ পরিদর্শন ও পরীক্ষা-নিরীক্ষান্তে সংগনিরোধ বালাই ও রোগ-বালাই মুক্ত হলে বহনকৃত পণ্যের জন্য সরকার নির্ধারিত  সংগনিরোধ ফিস গ্রহনের মাধ্যমে ছাড় করণ করা যাবে। {বিধি ৭(২) ও ১৮ তফসিল ৬ এবং আইনের ধারা ২৩}

ছ। কোন যাত্রী বিদেশ থেকে কোন প্রকার উদ্ভিদ বা উদ্ভিদজাত পণ্য আনবার ই”ছা পোষন করলে দেশ থেকে বহির্গমনের পূর্বে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্রসহ সরকার নির্ধারিত  ফিস জমাদান পূর্বক পরিচালক, উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইং, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ী, ঢাকা এর নিকট থেকে Import Permit (IP) গ্রহন করবেন এবং বিদেশ থেকে ফেরার সময় সংশ্লিষ্ট দেশের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে উদ্ভিদ স্বাস্থ্য সনদ (Phytosanitary Certificate) গ্রহন করতে হবে। অন্যথায়, এ ধরনের কোন পণ্য দেশে অনুপ্রবেশ করা যাবে না। { আইনের ধারা-(৯) বিধি ৯(২)}

জ। উদ্ভিদ সংগনিরোধ আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বা হচ্ছে বা হবার উপক্রম হয়েছে বা আইপি বা পিসি-এর শর্তাবলী লঙ্ঘিত হয়েছে বলে বিশ্বাস করবার যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকলে, কর্তব্যরতঃ উদ্ভিদ সংগনিরোধ কর্মকর্তা বহির্গমন ও আগমনের সময় যে কোন ব্যক্তির দেহ তল্লাশি অথবা ব্যক্তির সাথে বহনকৃত কোন , ব্যাগ মালামাল, যানবাহন তল্লাশি, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও আটক করতে পারবেন।{ উদ্ভিদ সংগনিরোধ আইন ২০১১ ধারা-৪(ধ)}

ঝ। উদ্ভিদ সংগনিরোধ জন্য আটক বা বাজেয়াপ্ত সকল উদ্ভিদ বা উদ্ভিদজাত দ্রব্যাদি উদ্ভিদ সংগনিরোধ কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং তিনি বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্ত উদ্ভিদ বা উদ্ভিদজাত দ্রব্যাদি পরিদর্শন ও পরীক্ষা-নিরীক্ষান্তে  প্রবেশে অসম্মতি প্রদান/ছাড়করণ/ধ্বংসকরণ/শোধন/নিষ্পত্তির ব্যবস্থা  গ্রহণ করবেন। { উদ্ভিদ সংগনিরোধ আইন ২০১১ ধারা ৭ ও ১৬ এবং উদ্ভিদ সংগনিরোধ বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি- ১২ ও ১৯} 

সহায়তা: কাস্টমস, কোস্ট গার্ড, পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, ডাক বিভাগ, বন্দর কর্তৃপক্ষ, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, রেল বিভাগ, শিপিং এজেন্সীজ, বিমান এবং সমজাতীয় সকল প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকর্তা এই আইনের পরিপন্থী কার্যক্রম রোধ করতে এবং উদ্ভিদ সংগনিরোধ কর্মকর্তাকে এই আইনের আওতায় ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালনের প্রয়োজনীয় সহযোগীতা প্রদান করবে। (উদ্ভিদ সংগনিরোধ আইন ২০১১ ধারা-২৩)

উদ্ভিদ সংগনিরোধ কার্যক্রমঃ

ক। উদ্ভিদ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা।

খ। অন্য দেশ হতে সংগনিরোধ বালাই এর অনুপ্রবেশ রোধ কল্পে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা।

গ। আমদানিকারক দেশের চাহিদা অনুয়ায়ী উদ্ভিদ স্বাস্থ্য  সনদপত্র (Phytosanitary Certificate) ইস্যু করা।

ঘ। আন্তর্জাতিক রীতিনীতি মেনে রপ্তানি কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা।

ঙ। উদ্ভিদ স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে আমদানীকৃত পণ্য ছাড়করণ করা।

চ। বিভিন্ন সরকারী সংস্থা যেমন কাস্টমস, , AVSEC, পুলিশ ইত্যাদি সমন্বয়ে উদ্ভিদ সংগনিরোধ কার্যক্রম পরিচালনা করা।

সম্মানিত যাত্রীদের প্রতি নির্দেশনাঃ

ক। সম্মানিত যাত্রী যদি কোন কৃষি ও কৃষিজাত পণ্য (যেমন: ফলমূল, শাক-সবজি, মসলা, প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য, শুকনো ফল ইত্যাদি) বিদেশ থেকে নিয়ে আসেন তবে অবশ্যই উদ্ভিদ সংগনিরোধ আগমনী ডেস্কে ঘোষনা পত্র দাখিল করবেন।

খ। বীজ ও চারা গাছের ক্ষেত্রে, বীজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা পূর্বক ৭২ ঘন্টা মধ্যে ছাড় করা হয়। এবং চারা গাছ বিদেশ থেকে নিয়ে আসলে অবশ্যই মাটি মুক্ত অবস্থায় উপযুক্ত শোধন করে আনতে হবে, অন্যথা আটক পূর্বক ধ্বংস করা হবে।

গ। বহির্গমন যাত্রীকর্তৃক বহনকৃত কৃষিজাত পণ্য (যেমন: ফলমূল, শাক-সবজি, মসলা, বীজ, গাছের চারা, প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য ইত্যাদি) বিদেশে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে যাত্রীকে অবশ্যই ২৪ ঘন্টা পূর্বে অত্র দপ্তরে উদ্ভিদের স্বাস্থ্য  সনদ (PC) এর জন্য আবেদন দাখিল করতে হবে।